নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, করোনার ভয়ংকর সংকটেও দেশের জনগণ সরকারকে পাশে পায়নি। এরইমধ্যে জ্বালানি তেল, নিত্যপয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা দাবি করছি দেশের জনগণের কাছে, এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য। এজন্য জনগণকে শপথ নিয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানাই।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন। এ সময় নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটি নেতা শহিদুল্লাহ কাওসার, জাহিদুর রহমান, জিল্লুর চৌধুরী জিকু, মমিনুল ইসলাম, কবির হাসান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোজ্য তেলের মতো পণ্যের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে মুহূর্তেই দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। যদিও নতুন মূল্যের পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে বাজারজাত হতে দুই মাসের বেশি সময় লাগে। অথচ বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে মুহূর্তেই মূল্যবৃদ্ধি করেছে সরকার। আবার মন্ত্রীরা বলছে, জ্বালানি তেল ভারতে পাচার হচ্ছে, আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে আমরা কেন জনগণের অর্থ খরচ করে একটি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি কেন পুষছি?
এবার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন ধর্মঘট হওয়াটা একেবারে অন্যায় উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভাড়া বৃদ্ধির পর সেতুমন্ত্রী স্পষ্টভাবেই বলেছিলেন সিএনজিচালিত কোনো পরিবহনের ভাড়া বাড়বে না। মজার ব্যাপার রাতারাতি এখন দেশের সব বাস ডিজেলচালিত হয়ে গেছে, অথচ বাস্তবতা একেবারে ভিন্ন। বিআরটিএর হিসাব অনুযায়ী ঢাকার ভিতরে মোট বাস ১২ হাজার ৫২৬টি। এরমধ্যে গ্যাসের চলে ১১ হাজার ৯০০টি। ডিজেলে চলে ৬২৬টি। দূরপাল্লার বাস মোট ১৬ হাজার। এরমধ্যে গ্যাসে চলে ১১ হাজার ২০০টি আর ডিজেলে চলে ৪ হাজার ৮০০টি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত অক্টোবর মাসে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছে। যাতে ২২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক লাফে ২২৬ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ২৫৯ টাকা করা হয়েছিল। একমাস যেতে না যেতেই ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে এর দাম আরও ৫৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকার তাদের স্বার্থে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণের জীবন নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছে।
সরকার নিত্য ব্যবহার্য ভোগ্যপণ্যের অবিশ্বাস্য মূল্য বাড়িয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। শুল্ক কমানোর পরামর্শ এসেছিল কিন্তু করা হয়নি। মজুতদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়নি।