প্রকাশ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের বিরোধিতা করছে ইসরায়েল। জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের জন্য মার্কিন কনস্যুলেট খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বাইডেন প্রশাসন। ইসরায়েল এর বিরোধিতা করে বলেছে- জেরুজালেমে নয়, কনস্যুলেট খোলা উচিত অধিকৃত পশ্চিম তীরে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমে মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ করে দিয়ে ইসরায়েলকে সন্তুষ্ট করেছিলেন। অন্যদিকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিলেন ফিলিস্তিনিদের। কনস্যুলেটের স্টাফদের সরিয়ে নিয়েছিলেন ইসরায়েলে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে।
আর ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এই দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় জেরুজালেমে। এতে আরও জটিল হয়ে ওঠে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট। দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নিয়ে মূলত এ অঞ্চলকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প।
ওদিকে, পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দাবি করে আসা ফিলিস্তিনিরা এতে চরম হতাশ হয়। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেওয়া ইসরায়েল একে তাদের অবিভক্ত রাজধানী হিসেবেই অভিহিত করে আসছে।
ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে এবার সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন প্রশাসন বলেছে, তারা আবার ফিলিস্তিনিদের সেবা দেওয়য়ার জন্য জেরুজালেমে মার্কিন কনস্যুলেট খুলে দিতে চায়।
অক্টোবরেই ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কনস্যুলেট খোলার প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যন্টনি ব্লিনকেন। তার এক মাসও না পেরোতেই এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে ইসরায়েলি নেতারা বলেছেন, এমন কনস্যুলেট খোলার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করার কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমেরিকাকে আমার অবস্থান জানানো হয়েছে। তা হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের সেবা দেওয়ার জন্য জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট স্থাপনের কোনও স্থান নেই। কোন নাটকীয়তা না করে, আমরা জোরাল এবং স্পষ্টভাবে আমাদের মত জানাচ্ছি।”
এরপর বেনেটের পাশেই থাকা ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনিদের জন্য কনস্যুলেট খোলার প্রস্তাব দেন। লাপিদ বলেন, “যদি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) চায় তাহলে রামাল্লায় কনস্যুলেট খুলতে পারে। তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।”
ওদিকে, লাপিদের এই প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গেই প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ। তিনি বলেন, আমরা কেবল জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট মেনে নেব। কারণ, জেরুজালেম হচ্ছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী। যুক্তরাষ্ট্র এটিই ঘোষণা করেছে এবং তা করার প্রত্যয়ও জানিয়েছে।”